
বাংলা রিডার ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার “সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে”, কারণ নিউইয়র্কের ভোটাররা বামপন্থী প্রার্থী জোহরান মামদানিকে তাঁদের নতুন মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) মায়ামিতে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন,
“আমরা বিষয়টা সামলে নেব।”
তবে তিনি কীভাবে তা করবেন, তা ব্যাখ্যা করেননি। বরং দাবি করেন, নিউইয়র্ক এখন “একটি কমিউনিস্ট শহরে” পরিণত হতে যাচ্ছে।
মামদানির বড় জয়ের পরদিন দেওয়া ওই বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, শিগগিরই মায়ামি হবে “নিউইয়র্কের কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসা মানুষের আশ্রয়স্থল”।
ট্রাম্প আরও বলেন, “আমেরিকানদের সামনে এখন খুব স্পষ্ট একটি সিদ্ধান্ত—এটি কমিউনিজম আর সাধারণ বুদ্ধির মধ্যে পছন্দের সময়। এটি একদিকে অর্থনৈতিক দুঃস্বপ্ন, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সাফল্যের বিস্ময়ের মধ্যে বেছে নেওয়ার প্রশ্ন।”
গত বছরের ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ওই ভাষণে ট্রাম্প বলেন,
“আমরা আমাদের অর্থনীতি উদ্ধার করেছি, স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করেছি, আর একসঙ্গে আমরা আমাদের দেশকে বাঁচিয়েছি—৩৬৫ দিন আগে সেই গৌরবময় রাতে।”
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয় আসে ট্রাম্প ও রিপাবলিকান শিবিরের ব্যাপক সমালোচনা ও বিরোধিতার মধ্য দিয়ে। ৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত এই ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট প্রার্থীর মুসলিম পরিচয় ও নীতিমালা নিয়ে ট্রাম্পপন্থী ব্যবসায়ী মহল, রক্ষণশীল গণমাধ্যম বিশ্লেষক এবং ট্রাম্প নিজেও প্রচণ্ডভাবে আক্রমণ চালিয়েছিলেন।
অন্যদিকে বিজয়োৎসবে জোহরান মামদানি বলেন,
“যদি কেউ দেখাতে পারে যে ট্রাম্পের মতো একজন নেতার বিভাজনমূলক রাজনীতি পরাজিত হতে পারে, তবে সেটা সেই শহরই করবে, যেখান থেকে তিনি নিজে উঠে এসেছেন।”
জোহরানের জয় এবং ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির গভর্নর নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের সাফল্য—সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ফলাফল আগামী বছরের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।
এছাড়া মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ার ভোটাররা একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন, যার মাধ্যমে অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী এলাকা পুনর্নির্ধারণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাসে রিপাবলিকানদের পক্ষপাতমূলক প্রভাব কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এসব নির্বাচনী ফলাফলের দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম “ট্রুথ সোশ্যালে” দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, কিছু বেনামি জনমত জরিপকারী বলেছেন, রিপাবলিকানদের পরাজয়ের কারণ হলো সরকারের অচলাবস্থা (শাটডাউন) এবং এই নির্বাচনে তাঁর নিজের নাম ব্যালটে না থাকা।



