
স্টাফ রিপোর্টার
“অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চাঁদপুরেও দেশের অন্যান্য জেলার মতো জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়ক হয়ে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে সপ্তাহটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে সদর উপজেলা পরিষদের পুকুরে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
এরপর উপজেলা মিলনায়তনে জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোতে মাছ চাষের উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। অভয়াশ্রমগুলোকে সুরক্ষিত রাখাই এখন সময়ের দাবি।”
তিনি আরও বলেন, “মার্চ-এপ্রিল মাসে জাটকা সংরক্ষণ ও অক্টোবর মাসে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করা গেলে চাঁদপুরে ইলিশসহ দেশীয় মাছের উৎপাদন আরও বাড়বে। পাশাপাশি, দেশের আমিষের চাহিদা পূরণেও বড় অবদান রাখবে।”
মৎস্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ডিসি বলেন, “শুধু নদীকেন্দ্রিক উদ্যোগ নয়, অব্যবহৃত পুকুরগুলোতেও মাছ চাষে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হতে পারে।”
তিনি মা ইলিশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, “আমরা অন্যায় করি, আবার অন্যকে দোষ দিই—এই মানসিকতা বদলাতে হবে। মা ইলিশকে নদীতে বাঁচতে দিন, তাহলেই চাঁদপুরে ইলিশের প্রাচুর্য ফিরে আসবে।”
সাংবাদিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় সাংবাদিকরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন। অভিযানের সময় তারা সংবাদ প্রকাশ করে, তথ্য দেয়, কিন্তু আমাদের অনেক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিই সেই ভূমিকা রাখছেন না।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন: পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, চাঁদপুর মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ বাবুল কৃষ্ণ ওঝা।
আলোচনা সভা শেষে ছয়জন সফল মৎস্যচাষীকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন: আকতার হোসেন (কচুয়া, মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ), জিএম ফারুক (চাঁদপুর সদর, রুই জাতীয় মাছ চাষ), মো. মাইনুদ্দিন (মতলব দক্ষিণ, তেলাপিয়া ও শিং মাগুর চাষ), মো. হাবিবুর রহমান (হাজীগঞ্জ, কৈ মাছ চাষ), মো. হুমায়ুন কবির (শাহরাস্তি, কার্প ও তেলাপিয়া চাষ), মো. মোশারফ হোসেন (মতলব উত্তর, রুই জাতীয় মাছ চাষ)