সাজিদের জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন সম্পন্ন

বাংলা রিডার ডেস্ক
দুই বছরের শিশু সাজিদের মৃত্যুর খবরে শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো গ্রাম। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে মসজিদের মাইকে একটাই ঘোষণা ভেসে আসছিল—‘কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসী রাকিব উদ্দীনের শিশু ছেলে সাজিদ আর নেই।’ মুহূর্তেই ভারী হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস, থমকে যায় স্বাভাবিক জীবন।

সকাল সাড়ে ১০টায় নেককিড়ি কবরস্থান-সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে সাজিদের দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় গ্রামের সব বয়সের মানুষই উপস্থিত ছিল—বৃদ্ধ, যুবক, স্কুলপড়ুয়া, সবাই। তাদের চোখে ঝরছিল অশ্রু। গ্রামের অনেকেই বলছিলেন, এমন দৃশ্য তারা কোনোদিন দেখেননি।

গ্রাম থেমে যায় এক শিশুর মৃত্যুতে

মসজিদের ঘোষণা শুনে কেউ মাঠে যায়নি, দোকানপাটও খোলেনি। গ্রামের মানুষ পাঞ্জাবি ও টুপি পরে সাজিদের বাড়ির দিকে ছুটে আসে, শেষবারের মতো দেখতে চায় সেই হাস্যোজ্জ্বল মুখটি—যে মুখ আজ নিথর।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদের মরদেহ পৌঁছে দেওয়া হয়। এর আগে বুধবার দুপুরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয় সে। ফায়ার সার্ভিস টানা ৩২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ৪০ ফুট মাটি খননের পর রাত ৯টার দিকে তাকে উদ্ধার করে। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানাজায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ

জানাজার মাঠে সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে। সাদা কাফনে মোড়ানো সাজিদের দেহ আনা হলে চারপাশে কান্নার রোল পড়ে যায়। শিশুটির মা বারবার ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরতে চাইছিলেন, স্বজনেরা ধরে রাখলেও তার আহাজারি থামানো যায়নি।

জানাজার ইমামতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। নামাজ শেষে হাজারো মানুষ হাত তুলেন দোয়ার ভঙ্গিতে—সাজিদের মাগফিরাত ও পরিবারের জন্য ধৈর্যের প্রার্থনা করেন।

কফিনটি যখন কবরের দিকে…

জানাজা শেষে যখন ছোট্ট কফিনটি কবরের দিকে নেওয়া হচ্ছিল, চারদিকে নিস্তব্ধতা নেমে আসে। বাতাস পর্যন্ত যেন থেমে যায়, শুধু শোনা যাচ্ছিল স্বজনদের কান্না। একটি শিশুর জানাজায় পুরো গ্রামের উপস্থিতি—গ্রামবাসী বলছে, এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য তারা আগে কখনও দেখেনি।

বিজ্ঞাপন

Recommended For You