
বাংলা রিডার ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় হঠাৎ অ্যালার্জি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। অনেকেই মনে করছেন, করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার পর থেকেই তারা অ্যালার্জিতে ভুগছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালার্জি বা স্ক্যাবিস বৃদ্ধির সঙ্গে টিকার কোনো সম্পর্ক নেই; এর মূল কারণ পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যবিধি অবহেলা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইমন বলেন, “ফাইজারের তিন ডোজ টিকা নেওয়ার পর থেকেই আমি ও আমার পরিবার অ্যালার্জিতে ভুগছি।” একই অভিযোগ করেছেন আরও কয়েকজন রোগী। অনেকেই জানিয়েছেন, চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়ায় তারা টিকাকেই দায়ী করছেন।
ওষুধ ব্যবসায়ীরাও জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে অ্যালার্জি ও চর্মরোগের ওষুধের বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। একাধিক দোকানি জানান, কিছু ওষুধ বাজারে ঘাটতিও দেখা দিয়েছে।
তবে চিকিৎসকরা এসব ধারণাকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে মনে করছেন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল বলেন, “এই রোগটি উচ্চমাত্রার ছোঁয়াচে। পরিবারে একজন আক্রান্ত হলে অন্যরাও সহজে আক্রান্ত হন। পানি দূষণ, বায়ুদূষণ ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশই মূল কারণ।”
ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজের চর্মরোগ বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান বলেন, “অ্যালার্জি বা স্ক্যাবিস নতুন কোনো রোগ নয়। করোনা টিকার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই—এটি সম্পূর্ণ গুজব। পুরোনো ওষুধের কার্যকারিতা কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং পরিবেশগত কারণেই এখন সংক্রমণ বেড়েছে।”
নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ.এফ.এম. মুশিউর রহমানও একই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার কয়েক বছর পর অ্যালার্জি হওয়া বৈজ্ঞানিকভাবে অসম্ভব। প্রকৃত কারণ হলো—বায়ুদূষণ, পানির মানহানি ও অসচেতনতা। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে।”
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, চর্মরোগ বা অ্যালার্জি দেখা দিলে টিকা নয়, বরং পরিবেশ ও জীবনযাত্রা পর্যালোচনা করাই জরুরি।



