ইসলামপুর সেতু: পর্যটনের নতুন দিগন্তে চাঁদপুর

স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীর বুকে দাঁড়িয়ে থাকা ২৭৪ মিটার দীর্ঘ ইসলামপুর সেতু এখন আর কেবল যাতায়াতের মাধ্যম নয়—এটি হয়ে উঠেছে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মানুষের মিলনের প্রতীক। এ সেতু বদলে দিয়েছে দুই পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রা ও সৃষ্টি করেছে নতুন পর্যটনের সম্ভাবনা।

চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রাম ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নকে সংযুক্ত করেছে এই সেতু। আগে যেখানে খেয়া পার হতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো, এখন মাত্র মিনিটের ব্যবধানে পার হওয়া যায় নদী। এতে যোগাযোগের দুর্ভোগ যেমন লাঘব হয়েছে, তেমনি অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও এসেছে গতি।

২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু, দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার ফল। যদিও শেষদিকে দুই পাড়ের সংযোগ সড়কের কাজে কিছুটা ধীরগতি ছিল, চলতি বছর সেটি সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন ছোট যানবাহন যেমন সিএনজি ও অটোরিকশা নিয়মিত চলাচল করছে, আর বড় যানবাহনের জন্য সড়ক উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।

এ সেতুকে ঘিরে আশেপাশে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রিক পরিবেশ। শান্ত নদী, সেতুর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ও চারপাশের সবুজে মানুষ ছুটে আসে এখানে বিকেল কাটাতে, সেলফি তুলতে কিংবা নৌভ্রমণে যেতে। প্রতিদিনই ভিড় জমে দর্শনার্থীদের। সেতুর উপরে বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান, জমে উঠেছে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসাও।

এ সেতু কৃষকদের জন্যও আশীর্বাদস্বরূপ। আগে ঘুরপথে পণ্য পরিবহন করতে হতো, এখন সরাসরি চাঁদপুর শহর বা কুমিল্লামুখী বাজারে পণ্য পাঠানো যাচ্ছে সহজেই। এতে সময় ও খরচ কমেছে, লাভ বেড়েছে, জমির দামও বেড়েছে আশেপাশের এলাকায়।

স্থানীয়দের ভাষায়, ইসলামপুর সেতু শুধু ইট-পাথরের কাঠামো নয়, এটি যুগের পর যুগের অবহেলিত মানুষের স্বপ্নের বাস্তব রূপ। তাদের আশা—সরকারি পরিকল্পনা ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এটি যেন চাঁদপুর জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়, হারিয়ে না যায় অবহেলায়।

বিজ্ঞাপন

Recommended For You