
বাংলা রিডার ডেস্ক
আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দেশের প্রখ্যাত লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে হঠাৎ কয়েকবার বমি করার পর দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। তার রয়েছে ফুসফুসের সমস্যা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও থাইরয়েডের জটিলতা। নতুন করে বমি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা পরিবারটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং খোঁজ নিচ্ছেন শিল্পীর বর্তমান অবস্থার।
অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সংগীত জগতে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সহশিল্পী, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা সামাজিক মাধ্যমে ফরিদা পারভীনের দ্রুত সুস্থতার কামনায় দোয়া করছেন।
এর আগেও চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে একই হাসপাতালে ভর্তি হন ফরিদা পারভীন। সেবারও আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একাধিক মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা শেষে তিনি ২১ জুলাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানার শাওল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। বেড়ে উঠেছেন কুষ্টিয়ায়। সংগীতচর্চার শুরু ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত গেয়ে। পরে দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে পরিচিতি পান।
লালনসংগীতে তার গুরু ছিলেন সাধক মোকসেদ আলী শাহ। তার কাছেই তালিম নিয়ে লালনসংগীতকে দেশ-বিদেশে তুলে ধরেন তিনি।
সঙ্গীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (সেরা প্লে-ব্যাক গায়িকা, ১৯৯৩) এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার পুরস্কার (জাপান, ২০০৮)।
শিশুদের লালনসংগীত শিক্ষা দিতে ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি সংগীত শিক্ষাকেন্দ্রও প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।