মাদককাণ্ড নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সাফা কবির

বাংলা রিডার ডেস্ক
গত বছরের ১৭ অক্টোবর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অরিন্দম রায় দীপ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রকাশ্যে আসে দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন অভিনেত্রীর নাম, যাদের মধ্যে ছিলেন সাফা কবির, তানজিন তিশা, টয়া এবং সুনিধি নায়েক।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর) শুরু করে বিশেষ অনুসন্ধান। তানজিন তিশা ও টয়া তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলেও, এ বিষয়ে চুপ ছিলেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাফা কবির। প্রায় এক বছর পর এবার তিনিও মুখ খুললেন।

সম্প্রতি এক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে সেই সময়ের মানসিক চাপ ও সামাজিক বর্জনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাফা বলেন, “বৃহস্পতিবার খবরটি প্রকাশের পর রোববার আমার একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেটি বাতিল করে দেয়। আমি বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে এটি শুধুমাত্র একটি সংবাদ—এর সঙ্গে আমার কোনো বাস্তব সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু কিভাবে তাদের প্রমাণ করব?”

তিনি আরও জানান,“আমার কাছে কিছুই ছিল না প্রমাণ করার মতো—শুধু বোঝানো ছাড়া। এমনকি সিনিয়র সহশিল্পীরাও আমার সঙ্গে কাজ বাতিল করে দিচ্ছিলেন। বিতর্ক এড়াতে অনেকেই দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। আমি বুঝতে পারছিলাম, সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল বিতর্ক চলছে। খুব কঠিন একটা সময় পার করেছি।”

তবে এই দুঃসময়ে শোবিজ অঙ্গনের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু পাশে ছিলেন বলে কৃতজ্ঞতা জানান সাফা। তিনি বলেন, “তৌসিফ মাহবুব তখন স্পষ্ট করে বলেছিল, সে আমার সঙ্গে কাজ করবে। জোভানও অনেক সাপোর্ট দিয়েছে, সিয়ামও মানসিকভাবে পাশে ছিল। এমন বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। অনেকেই বলেন মিডিয়ার মানুষেরা বন্ধু হয় না, কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা ভিন্ন।”

এদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দীপের ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট বিশ্লেষণ করে বেশ কয়েকজন তারকা অভিনেত্রীর মাদক সংক্রান্ত যোগাযোগের তথ্য মেলে। কিছু চ্যাট রেকর্ডে তাদের পক্ষ থেকে মাদক অর্ডার দেয়ার নির্দিষ্ট প্রমাণও পাওয়া গেছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন গণমাধ্যমকে জানান, “গ্রেফতারের পর দীপের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে, তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এছাড়া দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা কবির, টয়া, তিশা এবং সুনিধির নাম থাকা নম্বর থেকে নিয়মিত মাদক অর্ডারের তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানায় একটি সূত্র। পরে এসব নম্বরের রেজিস্ট্রেশন যাচাই করে দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি নাম নথিভুক্ত ছিল সাফা কবির এবং টয়ার নামে। তানজিন তিশার ব্যবহৃত নম্বরটি তার মা উম্মে সালমার নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত ছিল।

বিজ্ঞাপন

Recommended For You