টানা তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করছে ভারতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো।

মূলত মাদকের অবৈধ ব্যবহারের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এরই সঙ্গে সুশান্ত আত্মহত্যা মামলায় নতুন মোড় ঘুরলো। গত রবিবার থেকে রিয়াকে জেরা শুরু করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। আজ মঙ্গলবারও ডাকা হয়েছিল রিয়াকে।

কিছুক্ষণ জেরার পরই দুপুরে রিয়াকে আটক করে এনসিবি। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে পেশ করা হবে রিয়াকে।

গত রবিবার টানা আট ঘণ্টা জেরা করা হয় সুশান্তের এই প্রেমিকাকে।তার ভাই শৌভিকের মুখোমুখি বসিয়ে গতকাল সোমবার জেরা করা হয় ছ’ঘণ্টা। বার বার প্রশ্নের মুখে পড়ে গতকাল এনসিবির সামনে রিয়া বলেন — আমি যা করেছি, তা সবই সুশান্তের জন্য।’

আজ ফের রিয়াকে জেরার জন্য এনসিবির সদর দফতরে ডাকা হয়। সেখানে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জেরার পর দুপুর নাগাদ তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্পষ্ট হয় গণমাধ্যমের কাছে।

এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর কেপিএস মালহোত্রার বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে,  রিয়াকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

তবে এমন কিছু যে একটা ঘটতে পারে, আগে থেকেই তা আঁচ করতে পেরেছিলেন রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানেশিন্ডে। রিয়া গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে দিন কয়েক আগেই বিবৃতিও দেন তিনি।

মেয়ের বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়াল নিয়ে সরব হন রিয়ার বাবা ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী।

তিনি বলেছিলেন — আমার ছেলেকে গ্রেফতার করার জন্য ভারতকে অভিনন্দন। আমি নিশ্চিত, এর পরেই আমার মেয়ের পালা।

গত ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রার বাড়ি থেকে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। শুরুতে মুম্বাই পুলিশের হাতেই তদন্তভার ছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে ওঠে। সেই মামলায় রিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে মাদককান্ডের জড়িত থাকার কথা উঠে আসে।

তারপর থেকেই পৃথক পৃথক করে তদন্ত শুরু করে এনসিবি। তা নিয়ে গত সপ্তাহে দফায় দফায় জেরার পর গেলো শুক্রবার রিয়ার ভাই শৌভিক ও সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হন সুশান্তের হাউজ হেল্প দীপেশও।

৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হেফাজতে রয়েছেন তাঁরা।

এর আগেও রিয়ার মাদক প্রসঙ্গে জয়া সাহা এবং সিদ্ধার্থ পিঠানির সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে উঠে এসেছে মাদক যোগের কথা। সেখানে দেখা যায় তাঁর বন্ধু জয়া, রিয়াকে লেখেন –চার ফোঁটা পানি বা চায়ে মিশিয়ে ওকে খাইয়ে দাও। ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যেই মাতাল হবে।

তাছাড়াও অন্য একটি চ্যাটে দেখা যায় সুশান্তের ফ্ল্যাটমেট সিদ্ধার্থের থেকে রিয়া বাড়িতে মাদকের জোগান ও গুণমান সম্পর্কে জানতে চায়। প্রথমে অস্বীকার করলেও গতকাল সোমবার রিয়া এনসিবির কাছে সুশান্তের জন্য মাদক কেনার কথা স্বীকার করেন।

রিয়ার বয়ান অনুযায়ী সুশান্তের কর্মচারী দীপেশকে দিয়ে তিনি মাদক আনিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি নিজেই কোনও দিন গাঁজা-চরস বা অন্য কোনও ধরনের মাদক নেননি।

অভিনেত্রী জানান, ‘কেদারনাথ’-এর শুটিং-এর সময় থেকেই সুশান্ত মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন।